1. admin@orieldigital.pw : rahad :
  2. Jhrepons@gmail.com : halchal :
কেন চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করছে না জামায়াত | Daily Halchal Somoy
বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:১৭ পূর্বাহ্ন

কেন চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করছে না জামায়াত

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর, ২০২৫
  • ৭ Time View
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক অঙ্গনে জমে উঠেছে প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে আলোচনা। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ২৩৭ আসনে তাদের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এখন পর্যন্ত কেবল প্রাথমিক প্রার্থিতা প্রকাশ করেছে, চূড়ান্ত তালিকা এখনও ঘোষণা করেনি।এই বিলম্বকে ঘিরে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা। অনেকেই বলছেন, জামায়াত এখনো জোটগত সমন্বয়ের অপেক্ষায় আছে। তাছাড়া, দলটির অভ্যন্তরীণ কিছু আসনবিন্যাস ও প্রার্থীপদ নিয়ে ভাবানও দেরির কারণ হতে পারে। সব মিলিয়ে বিএনপির স্পষ্ট অবস্থান ও দ্রুত পদক্ষেপের বিপরীতে জামায়াতে ইসলামী এখনো কৌশলগত নীরবতায়, যা আসন্ন নির্বাচনের রাজনৈতিক সমীকরণে নতুন প্রশ্ন তৈরি করেছে।

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ধাপে ধাপে সারাদেশে প্রাথমিক প্রার্থিতা ঘোষণা করেছিল। ঘোষণার পর থেকেই দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। নিজ নিজ এলাকায় গণসংযোগ, মিছিল-মিটিং, উঠান বৈঠকসহ নানা সামাজিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন তারা।এতে স্থানীয় পর্যায়ে দলের উপস্থিতি ও কর্মী-সমর্থকদের উচ্ছ্বাস বেড়ে গেলেও এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা না হওয়ায় মাঠপর্যায়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, জামায়াতের এই সতর্ক ও ধীর কৌশল হয়তো তাদের ভবিষ্যৎ জোট–কৌশল বা নির্বাচনী হিসাব-নিকাশের অংশ হতে পারে।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, নির্বাচনের জন্য সবার আগে প্রস্তুতি নিয়েছে দল। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে নির্বাচনের বিষয়টি যখন প্রতিনিয়ত সংবাদের শিরোনামে, তখনও নেতারা বলেছিলেন, নির্বাচনের সময় জামায়াত যেকোনো সময় প্রস্তুত, হোক সেটা ডিসেম্বর, জানুয়ারি বা এপ্রিলে। তবে নির্বাচনের আগে অবশ্যই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে গণভোট অনুষ্ঠিত হতে হবে। এই অবস্থায় প্রার্থী চূড়ান্ত না হওয়া কি বার্তা দেয় সেটিও প্রশ্ন।তবে, জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জাতির স্বার্থে সব দিক বিবেচনা করেই চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করবেন তারা। বিভিন্ন দেশে ১৪ দিনের সফর শেষে মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দেশে ফেরেন আমির। এরপর তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দেশের সংবাদমাধ্যমগুলোর সঙ্গে আলাপ করেন। সেময় তিনি এ কথা জানান।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিএনপি চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেনি। তারা ২৩৭ আসনে প্রার্থী দিয়ে বলছে চূড়ান্ত নয়; এর মধ্যে পরিবর্তনও আসতে পারে। আমরা কিন্তু এক বছর আগেই এই তালিকা বিভিন্নভাবে আঞ্চলিকভাবে জানিয়ে দিয়েছি। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে চূড়ান্ত তালিকা সময়মতো প্রকাশ করা হবে।বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি জোটগত নির্বাচনের বিষয়টিও তোলেন। জামায়াতের আমির বলেন, যেহেতু আমরা একা ইলেকশন করব না, আরও অনেককে আমরা ধারণ করব দেশ ও জাতির স্বার্থে; সব দিক বিবেচনা করেই চূড়ান্তভাবে যথাসময়ে আমরা প্রার্থী ঘোষণা করব।

জামায়াতের প্রার্থী ঘোষণা দেরি কেন হচ্ছে, এমন ইঙ্গিত মেলে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারের কথায়। তার ভাষ্য, এমন কিছু আসন থাকবে যেখানে তারা নির্বাচন করতে পারবেন না। এমনটি হলে সেখানে তারা জোট প্রার্থী দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।গোলাম পরওয়ার বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী ৩০০ আসনেই সম্ভাব্য প্রাথমিক প্রার্থী দেওয়ার মাধ্যমে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। নির্বাচনের এমন কিছু আসন থাকবে, যেসব আসনে আমরা নির্বাচন করতে পারব না। যদিও আমরা ৩০০ আসন চূড়ান্ত করেছি। প্রাথমিক বাছাই হয়ে গেছে।

দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ জানিয়েছেন, জামায়াত ইতোমধ্যে আসনভিত্তিক প্রার্থী ঘোষণা করেছে। তারা প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে কিছু আসনের প্রার্থী পরিবর্তন হতে পারে। এর মধ্যে ক্লিন ইমেজের লোক অর্থাৎ যারা গ্রহণযোগ্য ও পরিচিত মুখ তাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে।

এদিকে, নির্বাচনের আগে গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ আটটি রাজনৈতিক দল ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এসব দাবির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে— জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের আয়োজন এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠা। দলটির শীর্ষ নেতারা সতর্ক করে বলেছেন, যদি গণভোট ও জুলাই সনদের আইনি স্বীকৃতি না দেওয়া হয়, তবে দেশের রাজনীতিতে ‘ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান’ ঘটবে। তাদের মতে, জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত না করে নির্বাচন আয়োজন মানে আবারও একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসনের দিকে ফিরে যাওয়া।

তাদের দাবি পাঁচটি হলো— ১. জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও উক্ত আদেশের ওপর আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যেই গণভোট আয়োজন; ২. আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে/উচ্চ কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু; ৩. অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা; ৪. ফ্যাসিস্ট সরকারের সকল জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা ও ৫. স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এসব বিষয়ে বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোট আয়োজন করাটাই যথার্থ পদক্ষেপ। আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যেই এই ভোট অনুষ্ঠিত হতে পারে। জুলাই সনদ এত গুরুত্বপূর্ণ যে কিছু ফান্ড ব্যয় করেও এটি গণভোটের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে হবে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন কোনো কারণে অনুষ্ঠিত না-ও হতে পারে, কিন্তু জুলাই সনদ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দলিল এবং এটি সবার আগে বাস্তবায়ন করতে হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
Theme Customized BY WooHostBD