ঋণ পরিশোধের সময়সীমা তিন মাস থেকে বাড়িয়ে ছয় মাস করা হলে ৫০০ থেকে ৬০০টি তৈরি পোশাক কারখানা শ্রেণিবদ্ধ ঋণের আওতায় পড়া থেকে রক্ষা পাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান।
(৩ জুলাই) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান ঋণ শ্রেণিবিন্যাস নীতিমালা পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান।
বিজিএমইএ সভাপতির ভাষায়, ‘ঋণ পরিশোধের সময়সীমা নয় মাস থেকে তিন মাসে নামিয়ে আনা হয়েছে, যা উদ্যোক্তাদের ওপর অপ্রয়োজনীয় চাপ সৃষ্টি করছে। অনেক কারখানা মালিক আর্থিক সংকটে এই সময়সীমা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছেন।’
বৈঠকে বিজিএমইএ সহ-সভাপতি মো. মিজানুর রহমান ও মো. শেহাব উদ-দৌজা চৌধুরীসহ প্রতিনিধিদল পোশাক শিল্পের নানা সংকট তুলে ধরেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—নগদ প্রণোদনা হ্রাস, গ্যাস সরবরাহের ঘাটতি, শুল্ক প্রক্রিয়ায় জটিলতা, ট্রেড লাইসেন্স ও আমদানি-রপ্তানি কোড নবায়নে সমস্যা।
প্রণোদনা হ্রাসের সমালোচনা করে মাহমুদ হাসান বলেন, ‘নিয়মিত সহায়তায় প্রণোদনা ১% থেকে কমিয়ে ০.৩%, আর বিকল্প বাজার প্রকল্পে ৪% থেকে কমিয়ে ১.৫% করা হয়েছে—যা শিল্পের বর্তমান বাস্তবতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’
বিজিএমইএ প্রাক-শিপমেন্ট ক্রেডিট পুনঃঅর্থায়ন প্রকল্পটি ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর দাবি জানায়। পাশাপাশি রপ্তানি আয়ের সঙ্গে যুক্ত একটি বাধ্যতামূলক ‘সংকট তহবিল’ গঠনের প্রস্তাব দেয়, যাতে জরুরি সময়ে শ্রমিকদের মজুরি দেওয়া সম্ভব হয়।
অবকাঠামোগত দিক থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও শুল্ক প্রক্রিয়া সহজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। বিশেষ করে রপ্তানি কার্যক্রমের লিড টাইম কমানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়।
এ ছাড়া নব আবিষ্কৃত ভোলা গ্যাসক্ষেত্র থেকে দ্রুত গ্যাস উত্তোলন ও এলএনজি আমদানি বাড়ানোর ওপর জোর দেয় প্রতিনিধিদল।
জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে অব্যবহৃত জমি ও জলাশয়ে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। পাশাপাশি মুন্সীগঞ্জের পরিত্যক্ত গার্মেন্টস ভিলেজ প্রকল্প পুনরুজ্জীবিত করা এবং চট্টগ্রামে ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানার জন্য বিশেষ শিল্পাঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্যও সহযোগিতা কামনা করে বিজিএমইএ।
আনিসুজ্জামান চৌধুরী বিজিএমইএ-র উত্থাপিত বিষয়গুলোর গুরুত্ব স্বীকার করে বলেন, ‘দেশের বৃহত্তম রপ্তানিখাতকে সহায়তা দিতে রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’