ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বিভিন্ন কোরবানির পশুর হাটে হাট ইজারাদার ও তার নিয়োজিত লোকজনেরা নিয়ম বহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত হাসিল (টোল) আদায় করছেন। অবিক্রীত পশু রাত না হওয়া পর্যন্ত বাড়িতে ফেরত নিতে দেওয়া হচ্ছে না বলে ক্রেতা-বিক্রেতারা অভিযোগ করেছেন। এসব নিয়ে পুলিশের সামনেই বাগ-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ছেন ইজারাদার, তাদের লোকজন ও ক্রেতা-বিক্রেতারা।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সালথা উপজেলার প্রতিটি পশুর হাটে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক কর্তৃক নির্ধারিত হাসিলের তালিকা টানানো বাধ্যতামূলক। তবে উপজেলার কোনো হাটেই তা টানানোর প্রয়োজন মনে করছে না প্রভাবশালী ইজারাদাররা। অভিযোগ রয়েছে, সালথা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ হাটের ইজারা পেয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। ফলে স্থানীয় প্রশাসন এই অনিয়ম দেখেও চোখ বন্ধ করে আছে। এ সুযোগে ইচ্ছামতো হাসিল তুলছেন ইজারাদাররা। এতে কোরবানির পশু কিনতে গিয়ে মানুষ হয়রানির মুখে পড়ছেন।
সালথা উপজেলার অন্যতম পশুর হাট আটঘর ইউনিয়নের নকুলহাটি। বুধবার বিকালে নকুলহাটি হাটে গরু- ছাগল কিনতে আসা ক্রেতারা জানান, এই হাটে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক কর্তৃক নির্ধারিত হাসিলের তোয়াক্কা না করে ক্ষমতার জোরে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রীতিমতো হাসিল আদায়ের নামের চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। সেখানে গরু প্রতি নির্ধারিত ২০০ থেকে ৫০০ টাকার বদলে ৫০০ থেকে ১৫০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। ছাগলের জন্য নির্ধারিত ১০০ থেকে ২০০ টাকার স্থলে আদায় হচ্ছে ৪০০ থেকে ২০০০ টাকা।
এছাড়া কেউ তার পশুটি বাড়িতে ফেরত নিতে চাইলে ইজারাদার ও তাদের নিয়োজিত কর্মীরা পশুটি নিজ বাড়িতে নেওয়ার অনুমতি দিচ্ছে না। তারা বলছেন রাত না হওয়া পর্যন্ত পশুটি হাট থেকে ফেরত নেওয়া যাবে না। এ নিয়ে বিপদে পড়ছেন দূর থেকে পশু নিয়ে হাটে আসা বিক্রেতারা।
সালথা উপজেলার বিভিন্ন হাটের গরু-ছাগল ক্রেতারা জানান, বিভিন্ন হাটে ছাগল প্রতি ৮০০ থেকে ২০০০ টাকা ও গরু প্রতি ১০০০ থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত হাসিল নেওয়া হচ্ছে। হাসিলের টাকা নিয়ে ইজারাদারের পক্ষে যে স্লিপ দেওয়া হচ্ছে তাতে শুধু গরুর দর লেখা হচ্ছে। হাসিলের অঙ্ক লেখা হচ্ছে না। কোনো ক্রেতা এই রসিদ নিতে না চাইলে হুমকি-ধমকি দিয়ে তাকে হাট থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে ছাগল হাটের হাসিল উত্তোলনকারী বিজু বলেন, ফরিদপুর জেলা প্রশাসক প্রায় ৩ বছর আগে এ হাসিল নির্ধারণ করে। আমরা হাসিলের দর পরিবর্তনের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানালেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, উপজেলায় পশুর হাটে অতিরিক্ত হাসিলের ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পাইনি। আমরা প্রতিটি হাটে হাসিলের ব্যাপারে তদারকি করব। প্রয়োজনে যে কোনো হাটে অতিরিক্ত হাসিল বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।