1. admin@orieldigital.pw : rahad :
  2. Jhrepons@gmail.com : halchal :
অর্থনৈতিকসংক্রান্ত টাস্কফোর্সের কাছে অভিযোগ গার্মেন্ট ব্যবসায়ীর | Daily Halchal Somoy
শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:০৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
দামি ঘড়ি-আইপ্যাড দেখে লোভ হয়েছিল ‘প্রলোভন’ জয়ের গল্প লিখলেন জ্বালানি উপদেষ্টা যাত্রাবাড়ী রাজনৈতিক হালচাল-সাফকথা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ ভাতা বেড়ে দ্বিগুণ নির্বাচন বৈধ না হলে তা আয়োজনের কোনো অর্থ নেই: ড. ইউনূস নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন কিনা, মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থাকে স্পষ্ট করলেন ড. ইউনূস শেখ মুজিবের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শোক জানিয়ে শোবিজ তারকাদের পোস্ট শিল্প খাতে মন্দা কাটছে না গাজীপুরে এক বছরে ১০৬ কারখানা বন্ধ, ‘অপরাধে ঝুঁকছেন’ বেকার শ্রমিকেরা ভারতে ৩ মাসে ২০০ মানুষের ধ’র্ষ’ণের শিকার বাংলাদেশি কিশোরি বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি চ্যালেঞ্জের মুখে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন

অর্থনৈতিকসংক্রান্ত টাস্কফোর্সের কাছে অভিযোগ গার্মেন্ট ব্যবসায়ীর

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২২ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ১৭৬ Time View

এসপিদের আবদার ও চাঁদা দিতে দিতে নিঃস্ব, বাঁচানোর আকুতি

‘আমি চাঁদা দিতে দিতে প্রায় নিঃস্ব হয়ে গেছি। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে গাজীপুরের সাবেক পুলিশ সুপারদের (এসপি) আবদার মেটাতে গিয়ে আমার হাঁসফাঁস অবস্থা। সঙ্গে আছে নানারকমের চাঁদা। শুধু শ্রমিকদের মুখের দিকে তাকিয়ে কোনোরকমে কারখানার উৎপাদন সচল রেখেছি। চাঁদাবাজদের হাত থেকে আমাকে বাঁচান।’ কথাগুলো বলছিলেন গাজীপুরের এক গার্মেন্ট ব্যবসায়ী। ওই সময় চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছিল মধ্যমমানের এই শিল্পপতির।

অর্থনৈতিকসংক্রান্ত টাস্কফোর্স কমিটির কাছে এভাবেই তার কষ্টের কাহিনী তুলে ধরেন তিনি। শুধু তিনিই নন, এ রকম অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী ও শিল্পপতির ছিল চাঁদাবাজি ও ঘুসসহ নানা অভিযোগ। সম্প্রতি রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত টাস্কফোর্সের মতবিনিয়ম সভায় এসব অভিযোগ উঠে আসে জোরালোভাবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) করা একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে।

টাস্কফোর্স সূত্রে জানা গেছে, ঘুস ও চাঁদাবাজির কারণেই মূলত পণ্যের দাম ও ব্যবসার খরচ বৃদ্ধিসহ নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে চাঁদাবাজি ও ঘুস লেনদেন বন্ধে একটি স্বাধীন ও স্বতন্ত্র ‘গুন্ডা প্রতিরোধ স্কোয়াড’ গঠনের সুপারিশ করতে যাচ্ছে টাস্কফোর্স। বৈষম্যহীন টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণ ও প্রয়োজনীয় সম্পদ আহরণসংক্রান্ত টাস্কফোর্সের খসড়া প্রতিবেদনে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই টাস্কফোর্স গঠন করে।

ওই মতবিনিময় সভায় অংশ নেওয়া একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সভায় বিভিন্ন খাতের এমনকি ইউটিউবারদেরও ডাকা হয়েছিল। অনেকেই ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরেন। কিন্তু ওই গার্মেন্ট ব্যবসায়ীর বক্তব্য উপস্থিত সবার হৃদয় স্পর্শ করেছে। তার চাঁদা দেওয়ার যে অভিজ্ঞতা সেটি মনোযোগ আকর্ষণ করেছে টাস্কফোর্সেরও। এটিকে কেউ কেউ নীরব ঘাতক হিসাবে উল্লেখ করেছেন। কখনও কখনও কাঙ্ক্ষিত চাঁদা নানা দেওয়ায় ঘটছে খুনের ঘটনাও। তাই তো খসড়া প্রতিবেদনে এটির প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। এ প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করতে পরিকল্পনা উপদেষ্টার মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে সময় চাওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, হাট-বাজার, ঘাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে স্বাধীন ও স্বতন্ত্র ‘গুন্ডা প্রতিরোধ স্কোয়াড’ গঠনের সুপারিশ করতে যাচ্ছে টাস্কফোর্স। এমনকি সরকারি সেবা পেতে অনৈতিক লেনদেন বা ঘুস বন্ধেও এ স্কোয়াড কাজ করতে পারে। খসড়ায় বলা হয়, সরকারি সেবা পেতে (অনলাইনে রেল টিকিট কেনা, পাসপোর্ট ইত্যাদি) অনেক সময় ঘুস দিতে হয়। এ ধরনের অনৈতিক লেনদেনের সমস্যা সরকারি সেবার বাইরে বেসরকারি খাতেও বিস্তৃত হয়েছে। যেমন বাজারঘাট, পরিবহণ ও নির্মাণ খাত। এসব খাতে চাঁদাবাজি বন্ধে গুন্ডা, মাস্তান ও সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধে স্কোয়াড কীভাবে কাজ করবে, সেটিও প্রতিবেদনের খসড়ায় উল্লেখ রয়েছে। এই স্কোয়ার্ড গঠনে সরকারি সংস্থার সদস্যদের দিয়ে কিংবা বেসরকারি নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের কর্মীও নেওয়া যেতে পারে।

এ প্রসঙ্গে টাস্কফোর্সের সভাপতি ড. কেএএস মুর্শিদ বলেন, চাঁদাবাজি আমাদের সমাজে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। প্রচলিত ব্যবস্থায় এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। সেজন্য আমরা একটি ‘অ্যান্টি গুন স্কোয়াড’ গঠনের সুপারিশ দিতে যাচ্ছি। তবে প্রস্তাবিত এই স্কোয়াডটি হবে সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং স্বতন্ত্র। সরকার আন্তরিক হলেই এটি বাস্তবায়ন সম্ভব। কেননা এখানে অনেক বড় কিছুর প্রয়োজন নেই। প্রাথমিকভাবে একদল দক্ষ আনসার দিয়েও এই স্কোয়াড গঠন করা যেতে পারে। তাদের প্রযুক্তিগত এবং অন্যান্য প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু এই দলকে যিনি বা যারা নেতৃত্ব দেবেন তাদের হতে হবে সরকারের প্রশিক্ষিত কোনো বাহিনীর পেশাদার ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। কেননা এখানে নেতৃত্বটাই মূল বিষয়। এই স্কোয়াড অন্য কিছু নিয়ে ভাববে না। শুধু চাঁদাবাজি ও ঘুস প্রতিরোধে সব সময় চিন্তাভাবনা করবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই স্কোয়াডের কার্যক্রম তদারকির জন্য শিক্ষার্থী এবং সুশীল সমাজের মানুষদেরও যুক্ত করা যেতে পারে। কেননা র‌্যাব একটি বিশেষ বাহিনী হিসাবে গঠিত হলেও পরবর্তী সময়ে নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিল। এটি যাতে তেমনটি না হয়। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই স্কোয়াডের জন্য খুব বেশি ব্যয় করতে হবে না। স্বল্প পরিমাণে সরকারি অর্থে এটি পরিচালনা করা যাবে।

সূত্র জানায়, অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যে সুশাসন নিশ্চিত করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা সংস্কার কমিশন (রেগুলেটরি রিফর্মস কমিশন) গঠনের সুপারিশ করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত টাস্কফোর্স। টাস্কফোর্সের খসড়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইন-কানুন-নিয়মনীতির অতি নিয়ন্ত্রণ এবং আমলাতন্ত্রের লালফিতার দৌরাত্ম্যের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বাধা সৃষ্টি করছে। এজন্য একটি সংস্কার কমিশন গঠন অপরিহার্য। প্রস্তাবিত কমিশন ব্যবসা পরিচালনা, করনীতি, বাণিজ্যসহ অর্থনৈতিক সুশাসনে বিভিন্ন ধরনের আইন-কানুন, নিয়মনীতি মূল্যায়ন, পর্যবেক্ষণ ও সংশোধনের কাজ করবে। এছাড়া সরকারি নিয়মনীতি, আইন-কানুন মূল্যায়ন ও পর্যবেক্ষণের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে একটি মন্ত্রণালয় স্থাপনেরও সুপারিশ করবে টাস্কফোর্স। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা, পেশাদারদের দিয়ে সরকারি পর্যায়ে নেতৃত্ব গঠন, সরকারি সেবা সহজ করা, বাজারের চাহিদা অনুসারে শ্রমশক্তি প্রস্তুত করা, রপ্তানি বৈচিত্র্যময় করা, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি, নিত্যপণ্যের মজুত বাড়ানোসহ বিভিন্ন বিষয় সুপারিশ করা হচ্ছে।

বিনিয়োগকারীদের জন্য ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ করতে নানা ধরনের সুপারিশ থাকছে টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনের খসড়ায়। রপ্তানি বাড়াতে দুটি উপায়ের কথা বলা হয়েছে। একটি হলো-উদীয়মান ও সম্ভাবনাময় খাতগুলো নানা ধরনের নীতি সহায়তা দেওয়া। অন্যটি হচ্ছে-তৈরি পোশাকের বাইরে প্রায় দেড় হাজার প্রতিষ্ঠান আছে, যারা বছরে ১০ লাখ ডলারের বেশি পণ্য রপ্তানি করে। এসব প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা দিতে হবে। এছাড়া বিনিয়োগকারীদের জন্য ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ আরও বেশি কার্যকর করতে হবে। এ সেবা অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার সুপারিশ করা হচ্ছে। এছাড়া স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে তথ্যপ্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার বৃদ্ধিকে কৌশলগত অগ্রাধিকারে আনতে হবে বলে মনে করছে কমিশন।

প্রতিবেদনের খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য বিভিন্ন সুপারিশ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য খাতে বিদেশি বিনিয়োগ সহজ করা হলে সাধারণ মানুষের উন্নত স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া নিশ্চিত হবে। ফলে বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা খরচের অর্থ সাশ্রয় হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে দক্ষ শ্রমশক্তির অভাব অন্যতম বড় সমস্যা। এক্ষেত্রে কারিগরি শিক্ষায় বিদেশি বিনিয়োগ এলে দক্ষ শ্রমিকের চাহিদার ঘাটতি পূরণ হবে এবং ওই সনদ আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা পেতে পারে। পলিটেকনিক ইনস্টিউটকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় এনে দুই বছরের বিএ (টেক) ডিগ্রি দেওয়ার সুপারিশ রয়েছে প্রতিবেদনে। এছাড়া শিল্প, স্বাস্থ্য ও সেবা খাতে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করে বিদেশে পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি বিশেষায়িত সরকারি প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে পেশাদার ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
Theme Customized BY WooHostBD