1. admin@orieldigital.pw : rahad :
  2. Jhrepons@gmail.com : halchal :
কারারক্ষীর পাঠানো গোপন চিঠিতে ভয়াবহ তথ্য হাই সিকিউরিটির জঙ্গিরা কথা বলেন মোবাইলে! | Daily Halchal Somoy
শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:০৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
দামি ঘড়ি-আইপ্যাড দেখে লোভ হয়েছিল ‘প্রলোভন’ জয়ের গল্প লিখলেন জ্বালানি উপদেষ্টা যাত্রাবাড়ী রাজনৈতিক হালচাল-সাফকথা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ ভাতা বেড়ে দ্বিগুণ নির্বাচন বৈধ না হলে তা আয়োজনের কোনো অর্থ নেই: ড. ইউনূস নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন কিনা, মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থাকে স্পষ্ট করলেন ড. ইউনূস শেখ মুজিবের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শোক জানিয়ে শোবিজ তারকাদের পোস্ট শিল্প খাতে মন্দা কাটছে না গাজীপুরে এক বছরে ১০৬ কারখানা বন্ধ, ‘অপরাধে ঝুঁকছেন’ বেকার শ্রমিকেরা ভারতে ৩ মাসে ২০০ মানুষের ধ’র্ষ’ণের শিকার বাংলাদেশি কিশোরি বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি চ্যালেঞ্জের মুখে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন

কারারক্ষীর পাঠানো গোপন চিঠিতে ভয়াবহ তথ্য হাই সিকিউরিটির জঙ্গিরা কথা বলেন মোবাইলে!

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৪
  • ৩১৯ Time View

কারারক্ষীর পাঠানো গোপন চিঠিতে ভয়াবহ তথ্য

কারাবিধি অনুযায়ী কোনো জঙ্গি বন্দি অবস্থায় মোবাইল ফোনে কথা বলারই সুযোগ নেই, অথচ বন্দি বিদ্রোহের সময় তারা মোবাইলে ভিডিও করেছে

গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি সেলে ব্লগার হত্যা মামলার জঙ্গি আসামিদের মোবাইল ফোন চালানোর সুযোগ করে দেওয়া হয়েছিল। বিনিময়ে লাখ টাকার ঘুস নেন কারা কর্মকর্তারা। বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরাও একই সুবিধা পেয়ে আসছিল সেখানে। সংশ্লিষ্ট সেলে দায়িত্বরত এক কারারক্ষীর পাঠানো চার পৃষ্ঠার চিঠিতে যুগান্তরকে ভয়াবহ এ তথ্য জানানো হয়।ক্ষুব্ধ এক কারারক্ষী শুক্রবার যুগান্তরকে বলেন, মোবাইল ফোন ব্যবহার এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, বন্দিদের সঙ্গে কারারক্ষীদের হামলা-পালটা হামলার ঘটনাও ওপর থেকে মোবাইলে ভিডিও করা হয়েছে। এতকিছুর পরও জেলার লুৎফুর রহমানকে সরানো হয়নি। পাগলাঘণ্টা বাজিয়ে কারাভ্যন্তরে গেলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় অন্তত ২০ কারারক্ষী আহত ছাড়াও ৬ বন্দি নিহত হন।

জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মশিউর রহমান এনডিসি শুক্রবার যুগান্তরকে বলেন, অভিযোগ অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ইতোমধ্যে হাই সিকিউরিটি সেল থেকে ১২০ বন্দি পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় জেল সুপার সুব্রত কুমার বালাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। অস্বাভাবিক অবস্থা বিরাজমান থাকায় ভেতরে-বাইরে কঠোর নিরাপত্তাবলয় তৈরি করেও কয়েকটি কারাগারে হামলা ঠেকানো যায়নি। অভিযোগগুলো কঠোর হাতে দমনের প্রক্রিয়া শুরু করব।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, এ হাই সিকিউরিটি সেলে তিন হাজারেরও বেশি বন্দি রয়েছেন। এর মধ্যে ১০ শীর্ষ সন্ত্রাসী ছাড়াও ২০০ থেকে ৩০০ আসামি আছেন, যাদের বিরুদ্ধে জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। এক হাজারেরও বেশি আছেন ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত। এরকম স্পর্শকাতর কারাগারে অবাধে মোবাইল ফোন ব্যবহার নিয়ে এর আগে বিভিন্ন সময় ঢাকার কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আলতাফ হোসেনকে জঙ্গিদের মোবাইল ব্যবহারের তথ্য জানানো হয়। কিন্তু তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। এই ডিআইজির বিরুদ্ধেও রয়েছে দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ। এর আগে রাজশাহীর দায়িত্বে থাকাবস্থায় আলতাফ হোসেনকে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে অভিযুক্ত করেছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের তৎকালীন অতিরিক্ত সচিব সৈয়দ বেলাল হোসেন। অথচ বিতর্কিত সেই কর্মকর্তাকেই অতি গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা বিভাগের ডিআইজি করা হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিআইজি প্রিজন আলতাফ হোসেনকে বেশ কয়েকবার মোবাইল ফোনে কল করার পরও তিনি তা রিসিভ করেননি। পরে খুদে বার্তা পাঠিয়ে অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য চাওয়া হয়। কিন্তু সাড়া পাওয়া যায়নি।

কারা সূত্র জানায়, জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আটক কোনো বন্দি কারাগার থেকে মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ পাবে না। করোনাকালীন দেখাসাক্ষাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মোবাইলে নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ করে দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেই সুযোগ এখনো অব্যাহত রয়েছে। তবে কোনো জঙ্গি, দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী বা শীষ সন্ত্রাসীর মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ রহিত করা হয়। বন্দি অবস্থায় সাধারণ হাজতি ও সাজাপ্রাপ্ত আসামি সপ্তাহে বা ১৫ দিনে একদিন ১০ মিনিট কথা বলতে পারবে। ক্যান্টিন পিসি থেকে প্রতি মিনিট ১ টাকা হারে কেটে নেওয়ার কথা থাকলেও তা মানা হয় না। টাকা নেওয়া হয় অনেক বেশি।

এদিকে বন্দির সঙ্গে নিকটাত্মীয়দের দেখাসাক্ষাতের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাধারণ বন্দি ও কয়েদিরা নিয়মানুযায়ী সুযোগ পেলেও শীর্ষ সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের বিষয়টি আলাদা করে রাখা রয়েছে। প্রতিমাসে এসব দাগি ও ঝুঁকিপূর্ণ আসামি মাসে একদিন অতি নিকটাত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রেও নিয়মকানুন রয়েছে। সাক্ষাতের সময় কারা কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি ছাড়াও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিকে উপস্থিত রাখতে হবে।

কারারক্ষীর পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ২৪ জুন বেলা ৩টায় ব্লগার হত্যা মামলার আসামি খাইরুলের কাছ থেকে চার্জারসহ একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। তাকে কোনো শাস্তি দেওয়া হয়নি। এমনকি তাকে কেস টেবিলেও হাজির করা হয়নি। পরিত্যক্ত অবস্থায় মোবাইল উদ্ধার দেখিয়ে ধামাচাপা দেওয়া হয়। এ নিয়ে সাধারণ বন্দিদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। কারণ, যেখানে সাধারণ বন্দিদের শাস্তি দেওয়া হয়, সেখানে স্পর্শকাতর মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয় না। হাই সিকিউরিটি কারাগারে এমন ঘটনা বিরল।তথ্য দিয়ে বলা হয়, ব্লগার-ব্লকের ৫নং কক্ষে একসঙ্গে থাকেন আলকায়দা শূরা সদস্য সায়মন ও আইএস শূরা সদস্য শরিফুল। রাত ১২টায় আকস্মিকভাবে ওই সেলে তল্লাশি করতে গেলে তাদের হাতে অ্যান্ড্রয়েড ফোন পাওয়া যাবে, কারা কর্তৃপক্ষকে এমন তথ্য দেওয়া হয়। বারবার এমন তথ্য জানানো হলেও সেখানে গোপন তল্লাশি পরিচালনা করা হয়নি। অথচ ২৩ জুন রাত ১২টায় শৈবাল বিল্ডিংয়ের ৬তলায় আকস্মিক তল্লাশি চালানো হয়। বন্দিদের অভিযোগ, সাধারণ বন্দিদের সেলে তল্লাশি চালানো হলেও স্পর্শকাতর বন্দিদের কৌশলে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।

জানা যায়, জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বন্দিরা একসঙ্গে একই সেলে বসবাস করে। তারা জেল সুপারকে একসঙ্গে থাকার দাবি জানিয়ে সফল হয়েছে। অথচ সিআইডি কারারক্ষীসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা হলি আর্টিজান মামলার আসামিদের মতো ব্লক ভেঙে পৃথক স্থানে রাখার পরামর্শ দেয়। কারণ, এরা একসঙ্গে হলেই মোবাইলে বাইরে যোগাযোগসহ নানা ধরনের শলাপরামর্শ করে সাংগঠনিক কাজ করার সুবিধা গড়ে তোলে। এসব পরামর্শ গ্রহণ না করে জেলার সিআইডি কারারক্ষীদের জবাব দিয়েছেন, ‘আমার কিছু করার নেই, সুপার স্যারের অর্ডার।’

চিঠির তথ্যে উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন আশঙ্কা থেকে এই জেলে (হাই সিকিউরিটি সেল) গুরুতর অপরাধীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এর মধ্যে প্রথম এক বছরে চারটি অ্যান্ড্রয়েড ও চারটি বাটন ফোন উদ্ধার হয়। এরপর তারা সুবেদারের মাধ্যমে জেল সুপারের সঙ্গে ১ লাখ টাকার চুক্তি করে। এই টাকা সংগঠন থেকে পাঠানো হয়। আলকায়দারই এক সদস্য হাই সিকিউরিটি সেলে বন্দি গুরুত্বপূর্ণ একাধিক মামলার আসামিকে এ তথ্য জানায়। সাবেক সুবেদার আব্দুল হামিদ গাজী প্রতিমাসের ১-২ তারিখে সায়মনের কাছ থেকে এই টাকা নিয়ে যান। অন্যান্য আসামি ও রাইটার বন্দিরা এই লেনদেনের বিষয়ে অবগত হলেও টাকার পরিমাণ সম্পর্কে জানত না।

একজন কারাবন্দি বিশেষ মাধ্যমে যুগান্তরকে জানান, হাই সিকিউরিটি কারাগারে জেল সুপার ও জেলারের নেতৃত্বে রয়েছে মাদক সিন্ডিকেট। এ বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘তারা ঘুস খায় না, শুধু মাদক এনে দেয়। মাদক ভেতরে ঢোকাতে সহযোগিতা করে কারারক্ষীর ভাষায় যাকে ‘লাইছ’ বলা হয়। ‘লাইছ’ হচ্ছেন জেলারের কাছ থেকে বিশেষ ক্ষমতাপ্রাপ্ত একজন কারারক্ষী। যিনি কারারক্ষীদের ডিউটি বণ্টন করেন। ডিউটি বণ্টন হয় লটারির মাধ্যমে, কিন্তু যে কারারক্ষী মাদক সরবরাহ করবে তাকে মুখে বলে দেওয়া হয়। কারারক্ষীদের ভেতরে ঢোকার সময় কঠোর তল্লাশির নিয়ম রয়েছে। কিন্তু তল্লাশি হয় শুধু নামমাত্র। ভেতরে জেলারের যে বিশ্বস্ত কয়েদি থাকেন। তারা যা বলেন, তাই কার্যকর। এই বিশ্বস্ত রক্ষীর কাজ হচ্ছে যারা বিক্রেতা, তাদের কাছে মাদক পৌঁছে দেওয়া।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাই সিকিউরিটি কারাগারে জেল সুপারের দায়িত্বে আছেন সুব্রত কুমার বালা। তিনি একই সঙ্গে কাশিমপুর-১ কারাগারেও সুপার হিসাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। জেলার হিসাবে আছেন লুৎফুর রহমান।

কারারক্ষীরা জানান, হাই সিকিউরিটি কারাভ্যন্তরে সিআইডি কারারক্ষী হিসাবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করছেন সহকারী প্রধান কারারক্ষী মো. হুমায়ুন। তার মাধ্যমে বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত প্রভাবশালী বন্দিদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয়। এই টাকা ভাগবাঁটোয়ারা করা হয় জেল সুপার, জেলারসহ অন্যদের মাঝে। প্রতিমাসে এ কারা ক্যান্টিন থেকেই অতিরিক্ত দাম বাবদ লাখ লাখ টাকা ভাগাভাগি করা হয়। করাভ্যন্তরের বাইরে দায়িত্বে আছেন রিজার্ভ প্রধান রক্ষী মো. বাচ্চু। তিনি তিন বছর ধরে রিজার্ভে আছেন। তার মাধ্যমে বেচাকেনা হয় এই হাই সিউকিউরিটি সেলের সব পোস্টিং। পোস্টিং দালালি করে থেকেও মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে তথ্য দিয়ে বলা হয়, ‘আইজি প্রিজন তিন মাসের বেশি কেউ এক জায়গায় দায়িত্বে থাকতে পারবে না, এমন নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে সিন্ডিকেট পরিচালনা করা হয়। গেটের ভেতর যৌথ বাহিনীর দায়িত্ব পালন করেন কারারক্ষী মো. এনামুল, জাহাঙ্গীর, করিম, মাহাবুব ও আহমেদ। তাদেরকে প্রতি সপ্তাহে পরিবর্তন করার নির্দেশ আইজি প্রিজনের। কিন্তু ডিআইজি, জেল সুপার, জেলার পরিবর্তন করতে চান না। কারণ, তাদের মাধ্যমে কারাভ্যন্তরে যায় দামি দামি মোবাইল ফোন। গুদামের দায়িত্বে আছেন কারারক্ষী মো. মামুন। তার মাধ্যমে বেচাকেনা হয় বন্দিদের সব খাবার। ক্যাস টেবিলের চিফ রাইটার মো. শাওন। তার মাধ্যমেও টাকা উঠানো হয়। টিভি মেরামত করেন কয়েদি বন্দি আকালু। তার মাধ্যমেও বিভিন্ন ওয়ার্ডে অফিস থেকে কিছু মোবাইল ফোন যায়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
Theme Customized BY WooHostBD