1. admin@orieldigital.pw : rahad :
  2. Jhrepons@gmail.com : halchal :
মহাকাণ্ডটির কারণ ঘটিয়ে দিয়ে গেছে রংপুরের ওই যুবক | Daily Halchal Somoy
শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:৩৩ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
দামি ঘড়ি-আইপ্যাড দেখে লোভ হয়েছিল ‘প্রলোভন’ জয়ের গল্প লিখলেন জ্বালানি উপদেষ্টা যাত্রাবাড়ী রাজনৈতিক হালচাল-সাফকথা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ ভাতা বেড়ে দ্বিগুণ নির্বাচন বৈধ না হলে তা আয়োজনের কোনো অর্থ নেই: ড. ইউনূস নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন কিনা, মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থাকে স্পষ্ট করলেন ড. ইউনূস শেখ মুজিবের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শোক জানিয়ে শোবিজ তারকাদের পোস্ট শিল্প খাতে মন্দা কাটছে না গাজীপুরে এক বছরে ১০৬ কারখানা বন্ধ, ‘অপরাধে ঝুঁকছেন’ বেকার শ্রমিকেরা ভারতে ৩ মাসে ২০০ মানুষের ধ’র্ষ’ণের শিকার বাংলাদেশি কিশোরি বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি চ্যালেঞ্জের মুখে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন

মহাকাণ্ডটির কারণ ঘটিয়ে দিয়ে গেছে রংপুরের ওই যুবক

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ৫ আগস্ট, ২০২৪
  • ৩২৫ Time View

চলমান বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে প্রাণহানি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তিনি ২ আগস্ট রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশে এতগুলো প্রাণ যে ঝরে গেল, এর দায়দায়িত্ব কার?’ সহিংসতায় প্রাণহানি ও সরকারি স্থাপনায় হামলার চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে জীবনগুলো ঝরে গেল, ছোট ছোট শিশু গুলিবিদ্ধ হলো, এ গুলিগুলো কীভাবে লাগল? একটা জিনিস গেলে আবার গড়ে তোলা যায়, কিন্তু জীবন গেলে তো আর ফিরে পাওয়া যায় না’। প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করলেও এর কোনো উত্তর তিনি দেননি। তবে এ কথা ঠিক, গত কয়েক সপ্তাহে ঘটে যাওয়া বর্বর হত্যাকাণ্ড ও সহিংসতা নিয়ে তিনি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নই উত্থাপন করেছেন। বাংলাদেশের মানুষও এ প্রশ্নের উত্তরই খুঁজে ফিরছে। সবার মনেই প্রশ্ন, ছাত্রদের নিয়মতান্ত্রিক কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কোন উদ্দেশ্যে সহিংসতার দিকে ঠেলে দেওয়া হলো? সহিংসতায় রূপ নেওয়ার আগেই শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত দাবি মেনে নেওয়া কি সম্ভব ছিল না? শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যা সমাধানের পথে পা না বাড়িয়ে আন্দোলন জোরপূর্বক দমনের নামে নিজস্ব বাহিনী ও পুলিশকে রাজপথে নামিয়ে দিয়ে সরকার কি লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা করেছিল? দমনের নামে পুলিশ গুলি করে যে অবর্ণনীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, তার দায়দায়িত্ব কে নেবে? এমন আরও অনেক প্রশ্নের উত্তর আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।

পৃথিবীর ইতিহাসে চীনের তিয়েন আনমেন স্কোয়ারে ছাত্র আন্দোলনের পরই জীবনহানি সংখ্যার বিবেচনায় বাংলাদেশের এ ছাত্র আন্দোলনকে দ্বিতীয় বৃহত্তম ছাত্র আন্দোলন বলা যায়। এ আন্দোলনে দেশজুড়ে ২২০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। ছাত্র আন্দোলনে এর চেয়ে বেশি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল তিয়েন আনমেন স্কোয়ারে। ১৯৮৯ সালের ৩-৪ জুন বেইজিংয়ে, ছাত্রদের নেতৃত্বে তিয়েন আনমেন স্কোয়ারে এক ব্যাপক বিক্ষোভ হয়, তাতে ২৪১ জন নিহত হয়েছে বলে চীন সরকার স্বীকার করলেও বেসরকারি হিসাবে হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছিল প্রায় আড়াই হাজার। আমাদের এ আন্দোলনে সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী, ১৫০ জনকে হত্যা করা হয়েছে বলা হলেও সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করেনি। তাদের হিসাবে প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেশি হবে।

৩১ জুলাই

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পুনরায় চালু হওয়ার পর মানুষ হত্যাকাণ্ডের যে দৃশ্যাবলি দেখেছি, নৃশংস ও নির্মমতার দিক দিয়ে তা কেবল মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানিদের হাতে বাঙালি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেই তুলনা চলে। সাভারের কাছে পুলিশের আর্মার্ড পারসোন্যাল কেরিয়ার অথবা এপিসির ওপর থেকে গুরুতর আহত একজন শিক্ষার্থীকে পুলিশ সদস্যরা যেভাবে রাস্তার ওপর ফেলে দিয়েছে, তা দেখে মানুষ স্তম্ভিত হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীটি হয়তো গুলি অথবা পুলিশের পিটুনি খেয়ে মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন। রাস্তায় পড়ার পর আহত শিক্ষার্থীটিকে নড়াচড়া করতে দেখা গেছে। তিনি টেনে টেনে নিঃশ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। পুলিশ শিক্ষার্থীটিকে ছুড়ে ফেলেই শান্ত হয়নি। পশুর মতো টেনেহিঁচড়ে রাস্তার মাঝ বরাবর নিয়ে যায়, তারপর সড়ক ডিভাইডারের ওপর দিয়ে রাস্তার ওপর পাশে আছাড় মেরে ছুড়ে ফেলে। ততক্ষণে ছেলেটি মরেই গেছে। আহত শিক্ষার্থীকে এভাবে মেরে ফেলার দৃশ্যটি এখনো নেট দুনিয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে। আমার বিশ্বাস, দুনিয়ার যে কেউ এ নির্মম দৃশ্য দেখে নিজেকে স্থির রাখতে পারবেন না। প্রশ্ন হচ্ছে, শিক্ষার্থীটি তো আহত ছিলেন, পুলিশের উচিত ছিল এমন পাশবিক আচরণ না করে তাকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া। জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী, যুদ্ধ ক্ষেত্রেও আহত শত্রুকে চিকিৎসা দেওয়া রেওয়াজ আছে। এটি যুদ্ধ ক্ষেত্রও নয়। শিক্ষার্থীটির হাতে কোনো মারণাস্ত্রও ছিল না। তাহলে এমন করে তাকে মেরে ফেলা হলো কেন? আরও একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশের তাড়া খেয়ে একজন তরুণ রামপুরার একটি নির্মাণাধীন ভবনে জালানার কার্নিশে আত্মরক্ষার জন্য আশ্রয় নেন। পুলিশের একজন সদস্য তার পিছু পিছু এসে দেখতে পেয়ে খুব কাছ থেকে তিন থেকে চারটি গুলি করে মারাত্মকভাবে জখম করে চলে যায়। আশ্চর্য হয়ে লক্ষ করেছি, তার পরপরই অন্য একজন পুলিশ সদস্য এসে আরও কয়েক রাউন্ড গুলি করে তরুণটির মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যান, যা ছিল খুবই নির্মম ও বর্ণনাতীত। অথচ পুলিশ অতি সহজেই তরুণটিকে গ্রেফতার করতে পারতেন। কারণ, তরুণটির জানালার কার্নিশ থেকে অন্য কোথাও পালিয়ে যাওয়ার পথ ছিল না। সম্ভবত পাশের ভবন থেকে কেউ একজন এ দৃশ্য ধারণ করে নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে দেন, যা দেখে সবাই স্তম্ভিত হয়ে পড়ে। আমি বিশ্বাস করি, পুলিশের এ বর্বর আচরণ পৃথিবীর সব মানবতাবিরোধী অপরাধকে ছাড়িয়ে গেছে। পুলিশ সদস্যদের এমন বর্বর আচরণ দেখে মনে মনে ভেবেছি, ওরাই কি আমার দেশের পুলিশ? আমারই মতো বাংলায় কথা বলেন? ওরা কি এদেশেরই সন্তান? আমি কিছুতেই এর উত্তর খুঁজে পাইনি।

আগেই বলেছি, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে এযাবৎ ২২০ জনের নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৭৫ জনের মৃত্যুর অনুসন্ধান করতে গিয়ে ৭৮ শতাংশের শরীরে প্রাণঘাতী গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। ১৭৫ জনের মধ্যে ৩২ জন শিশু-কিশোর। শিশু মৃত্যুর হার দেখে জাতিসংঘের শিশু ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। প্রশ্ন উঠেছে, আইনবহির্ভূতভাবে একে সিরিজের অ্যাসল্ট রাইফেলের মতো প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্রের নির্বিঘ্ন ব্যবহার নিয়ে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও এসব অস্ত্রের বেআইনি ব্যবহার নিয়ে অভিযোগ তুলেছে। অথচ এসব অস্ত্র পুলিশের ব্যবহারের জন্য অন্তর্ভুক্ত করা ঠিক হয়নি। কারণ প্রাণঘাতী অস্ত্র কখনো নিরস্ত্র মানুষের বিক্ষোভ দমনে ব্যবহার করা হয় না। আন্দোলন শুরু হওয়ার পর সারা দেশে মোট ১১ হাজারেরও বেশি আন্দোলনকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ লেখা যখন লিখছি, তখন পর্যন্ত শুধু ঢাকায় ২৭২টি মামলায় গ্রেফতার হয়েছে ৩ হাজার ৭ জন। এর মধ্যে ৮৮ শতাংশ মানুষের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। অথচ সরকার ও পুলিশের তরফ থেকে সহিংসতায় রাজনৈতিক দলের সংশ্লিষ্টতার কথা বারবার বলা হলেও বেশিরভাগ সাধারণ মানুষই গ্রেফতার হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী এবং সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের সংখ্যাই বেশি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
Theme Customized BY WooHostBD