সম্প্রতি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লালন শাহ হলে নবীন শিক্ষার্থীকে বিবস্ত্র করে র্যাগিং ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে তিন শিক্ষার্থীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়াও ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য দুই শিক্ষার্থীকে সর্তক করা হয়েছে।
রোববার (২ জুন) রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসান স্বাক্ষরিত পৃথক অফিস আদেশে এসব তথ্য জানানো হয়। বহিষ্কৃত সবাই শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। বহিষ্কৃতরা হলেন- শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মুদাচ্ছির খান কাফি ও একই শিক্ষাবর্ষের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সাগর প্রামাণিক ও মো. উজ্জ্বল।এ ছাড়া অর্থনীতি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের নাসিম আহমেদ মাসুম এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের মিসনো আল আসনাওয়ীকে সতর্ক করা হয়েছে।
অফিস আদেশ সূত্রে জানা যায়, ২৯ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির ১৩ তম সভায় তদন্ত কমিটির সুপারিশের আলোকে তাদের শাস্তির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাফি, সাগর ও উজ্জ্বলকে দুই সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়। আগামী সাত কার্য দিবসের মধ্যে বহিষ্কৃতদের আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য লিখিতভাবে জবাব দিতে বলা হয়েছে। অন্য দুইজনকে ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত হলে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে বলে অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
সূত্র মতে, গত ৭ ফেব্রুয়ারি লালন শাহ হলের গণরুমে (১৩৬ নম্বর কক্ষে) নবীন ছাত্রকে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠে। ভুক্তভোগী আল-ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্ট্যাডিজ বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অপু মিয়া। ওইদিন রাত সাড়ে ১২টা থেকে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত দফায় দফায় তার ওপর নির্যাতন চালানো হয় এবং ভয় দেখিয়ে বার বার বেড-পত্র বাইরে ফেলে দেয়া হয় বলে জানায় ভুক্তভোগী। নির্যাতনের সময় উলঙ্গ করে বেঞ্চের উপর দাঁড় করিয়ে রাখা, বারংবার রড দিয়ে আঘাত, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও নাকে খত দেয়া হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
ঘটনা প্রকাশ্যে এলে ১৩ ফেব্রুয়ারি পৃথকভাবে তদন্ত কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট হল কর্তৃপক্ষ। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে প্রশাসনের তদন্ত কমিটি ও ২২ এপ্রিল হল কর্তৃপক্ষ থেকে গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়। তদন্তের প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায় বলে জানায় সূত্র। ফলে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। কমিটির সুপারিশ ও প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে তাদের শাস্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।