কুমিল্লা কোতয়ালী থানার চৌকষ অভিযানে অদ্য ১৭/০৫/২৪ ইং তারিখ রোজ শুক্রবার টিক্কার চর এলাকার বাসিন্দা অটোরিক্সা ড্রাইভার পরান নিজ অটোরিক্সা নিয়ে আনুমানিক সন্ধ্যা ৬ টায় নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে অটোরিক্সাসহ নিখোজ হন। একই তারিখ ময়নামতি হাইওয়ে থানা পুলিশ কুমিল্লার সদর দক্ষিন থানাধীন হারাতলী এলাকার মহাসড়কে পিষ্ট অবস্থায় একটি মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরবর্তীতে উক্ত মৃতদেহটি অটোরিক্সা চালক পরানের বলে ফিঙ্গার প্রিন্ট পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া যায়।উক্ত ঘটনায় নিহত পরানের স্ত্রী বাদী হয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
গত কিছুদিন যাবৎ কুমিল্লা মহানগরীসহ সদর দক্ষিন ও বুড়িচং থানা এলাকায় একটি চক্র প্রায় একই রকম বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটায় বলে জেলা পুলিশের গোচরীভূত হয়।
সম্মানিত পুলিশ সুপার, কুমিল্লা স্যারের সার্বিক নির্দেশনায় ও অতিঃ পুলিশ সুপার, সদর সার্কেল এর তত্ত্বাবধানে উক্ত চক্রটিকে গ্রেফতার করতে কোতয়ালী মডেল থানা ও জেলা ডিবির সমন্বয়ে একটি বিশেষ টিম কাজ শুরু করে।স্থানীয় সোর্সের মাধ্যমে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় উক্ত টিম পরান হত্যাকান্ডে জড়িত জাবেদকে গত ২৭/০৫/’২৪ ইং তারিখ রাত ০৯.১৫ ঘটিকার সময় কোতয়ালী থানাধীন গোবিন্দপুর রেলগেট এলাকা হতে গ্রেফতার করে।গ্রেফতারকৃত জাবেদকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে নিজে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং অন্যান্য সহযোগী আসামীদের নাম প্রকাশ করে।প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ২৭/০৫/’২৪ ইং তারিখ রাত ১০.৩০ ঘটিকায় অপর আসামী শরীফকে শাকতলার নিজ ভাড়া বাসা হতে গ্রেফতার করা হয়।অপর আসামী রুবেলকে ২৭/০৫/’২৪ ইং তারিখ ১১.৩০ঘটিকায় আড়াইওড়া সমিতিপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।গ্রেফতারকৃতদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ২৮/০৫/২০২৪খ্রিঃ তারিখ ৩.৩০ঘটিকার সময় চৌদ্দগ্রাম থানাধীন শুভপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের আমির হোসেন এর গ্যারেজে অভিযান চালিয়ে ৭টি অটোরিক্সা, ৪টি অটোরিক্সার ব্যাটারী এবং বেশ কিছু অটোরিক্সার যন্ত্রাংশ উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়।গ্যারেজ মালিক আমির হোসেন এবং তার অপর সহযোগী সোহাগ মিয়াকে গ্রেফতারপূর্বক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ চোরাই অটোরিক্সা কিনে তাৎক্ষনিকভাবে রং সহ নানা রকম পরিবর্তন ঘটিয়ে অন্যত্র বিক্রয় করে আসছে।
আসামীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে, চক্রটি দীর্ঘদিন যাবৎ সন্ধ্যায় মহানগরীসহ আশপাশ এলাকা হতে কৌশলে অটোরিক্সা ভাড়া নিয়ে থাকে।একপযায়ে সুকৌশলে অটোরিক্সার ড্রাইভারকে বিশেষ উপায়ে তৈরী চেতনানাশক মিশ্রিত বিস্কুট/কোমলপানীয় খাইয়ে মহাসড়কে ড্রাইভারকে ফেলে রেখে অটোরিক্সাটি নিয়ে চলে যায়।এক্ষেত্রে চেতনাহীন ড্রাইভার মহাসড়কে ভারী যানবাহনে পিষ্ট হয়ে মৃত্যুবরন করে।জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত চক্রটি বেশ কয়েকটি ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। উক্ত চক্রের নেতৃত্বে একজন দলনেতা সকলকে পরিচালনা এবং দিক নির্দেশনা প্রদান করে বলেও জানা যায়।পুরো চক্রের অন্যান্য সদস্যদের সনাক্তকরন এবং গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের নাম ও ঠিকানাঃ
০১।মোঃ শহিদুল ইসলাম আব্দুল শহিদ জাবেদ হোসেন (২৬), পিতা-মোঃ আব্দুল হাকিম, মাতা-মৃত হাজেরা বেগম, গ্রাম-শাকতলা র্যাব অফিসের সামনে মোসলেম সরদারের বাড়ী সংলগ্ন নুরু মিয়ার ২তলা বাড়ী, থানা- সদর দক্ষিন, জেলা : কুমিল্লা।
০২। মোঃ শরীফ (২৫), পিতা- মোঃ আব্দুল রব, মাতা- মৃত মনোয়ারা বেগম, গ্রাম-অম্বরপুর, ০৯ নং ওয়ার্ড, মহিচাইল ইউপি, থানা- সদর দক্ষিন, জেলা- কুমিল্লা।
০৩। মোঃ রুবেল(২৮), পিতা- দেলোয়ার হোসেন, মাতা- দিলারা বেগম, গ্রাম-শাকতলা উত্তরপাড়া, মাষ্টার বাড়ী, থানা-সদর দক্ষিন, জেলা- কুমিল্লা।
০৪।মোঃ আমির হোসেন(৩২), পিতা-মৃত আরব রহমান, মাতা- মোছাঃ সেনোয়ারা বেগম, গ্রাম-গোবিন্দপুর, নদীর পাড়, ০১ নং ওয়ার্ড, শুভপুর ইউপি, থানা-চৌদ্দগ্রাম, জেলা- কুমিল্লা।
০৫। মোঃ সোহাগ হোসেন(২৫), পিতা- মৃত সুরুজ মিয়া, গ্রাম-গোবিন্দপুর, উত্তর পাড়া, মুন্সি বাড়ী, ০১ নং ওয়ার্ড, শুভপুর ইউপি, থানা-চৌদ্দগ্রাম, জেলা- কুমিল্লা।
উদ্ধারকৃত আলামতঃ
১)চোরাই ৭(সাত)টি অটোরিক্সা,
২)চোরাই ৪টি অটোরিক্সার ব্যাটারী,
৩)চোরাই বেশ কিছু অটোরিক্সার যন্ত্রাংশ।