1. admin@orieldigital.pw : rahad :
  2. Jhrepons@gmail.com : halchal :
বগুড়ায় স্ত্রী-ছেলেকে খুন পরে নিখোঁজ নাটক | Daily Halchal Somoy
শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:০৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
দামি ঘড়ি-আইপ্যাড দেখে লোভ হয়েছিল ‘প্রলোভন’ জয়ের গল্প লিখলেন জ্বালানি উপদেষ্টা যাত্রাবাড়ী রাজনৈতিক হালচাল-সাফকথা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ ভাতা বেড়ে দ্বিগুণ নির্বাচন বৈধ না হলে তা আয়োজনের কোনো অর্থ নেই: ড. ইউনূস নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন কিনা, মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থাকে স্পষ্ট করলেন ড. ইউনূস শেখ মুজিবের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শোক জানিয়ে শোবিজ তারকাদের পোস্ট শিল্প খাতে মন্দা কাটছে না গাজীপুরে এক বছরে ১০৬ কারখানা বন্ধ, ‘অপরাধে ঝুঁকছেন’ বেকার শ্রমিকেরা ভারতে ৩ মাসে ২০০ মানুষের ধ’র্ষ’ণের শিকার বাংলাদেশি কিশোরি বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি চ্যালেঞ্জের মুখে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন

বগুড়ায় স্ত্রী-ছেলেকে খুন পরে নিখোঁজ নাটক

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ২ জুন, ২০২৪
  • ৩৩৫ Time View

হোটেল কক্ষ ভাড়া নিয়ে স্ত্রী ও সন্তানকে নৃশংসভাবে গলা কেটে হত্যার পরও থামেনি ঘাতক আজিজুল হক। ১ বছর বয়সী ছেলে আবদুল্লাহ আল রাফির শরীর থেকে মাথা কেটে ব্যাগে ভরে সাত কিলোমিটার দূরে করতোয়া নদীতে ফেলে দেয়। জোড়া খুনের পর নিজেই সাজে সাধু। মঞ্চস্থ করে স্ত্রী-সন্তান নিখোঁজ নাটক! খুনের আগে স্ত্রী-ছেলের সঙ্গে ছবিও তোলে। তিনজনের সেই ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে গতকাল রোববার সকালে আজিজুল লেখে, ‘আমার স্ত্রী ও সন্তান নিখোঁজ’। তবে বেশি দূর এগোতে পারেনি কুশীলব সেনাসদস্য আজিজুল। পুলিশের হাতে ধরা পড়ে হত্যার দায়ও স্বীকার করেছে। মর্মস্পর্শী ঘটনাটি বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার।

গতকাল মা-ছেলের লাশ শাজাহানপুরের শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেলের ৩০১ নম্বর কক্ষ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে রাফির খণ্ডিত মাথার খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি। আজিজুল ধুনট উপজেলার কালেরপাড়া ইউনিয়নের হুইটনগর গ্রামের হামিদুর রহমানের ছেলে। তার স্ত্রী আশামণি (২০) বগুড়া সদরের আকাশতারা এলাকার আসাদুল ইসলামের মেয়ে।

আজিজুলের দাবি, স্ত্রী আশামণি অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ায় তাঁকে হত্যা করেছে। অন্যদিকে নিহতের পরিবার বলছে, যৌতুকের জন্য আশামণিকে হত্যা করেছে সে।
যেভাবে হত্যা

গেল শনিবার বিকেলে ৭০০ টাকায় শাজাহানপুরের ওই হোটেল কক্ষ ভাড়া নেয় আজিজুল। রাত সাড়ে ৮টার দিকে দু’জনকে গলা কেটে হত্যার পর স্ত্রীর লাশ বাথরুমে রাখে। এক পর্যায়ে ছেলের মাথা কেটে ব্যাগে ভরে। পরে মাথাহীন দেহ খাটের নিচে রেখে হোটেল থেকে বের হয়ে যায় আজিজুল। এর পর রাফির খণ্ডিত মাথা শহরের করতোয়া নদীতে ফেলে ছোটে শ্বশুরবাড়ির দিকে। এর পর শুরু হয় আজিজুলের নাটক!

রাতেই শ্বশুরবাড়ি গিয়ে সে জানায়, আশামণি ও রাফিকে ইজিবাইকে তুলে দিয়েছে এখানে আসার জন্য। এর পর তাদের খোঁজ পাচ্ছে না। শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার কথা আমলে নিয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। রাতভর খুঁজে না পেয়ে আজিজুলকে নিয়ে তাঁর শ্বশুর সদর থানায় জিডি করতে যান। আজিজুল জিডি করতে না চাইলে শ্বশুর বাদী হয়ে গতকাল সকাল ১০টার দিকে জিডি করেন। পাশাপাশি শহরে করা হয় মাইকিং।

এদিকে আজিজুল শনিবার রাতে না ফিরে পরদিন হোটেলে ফিরলে সেখানকার লোকজনের সন্দেহ হয়। এক পর্যায়ে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে তাকে আটক করে। পরে হোটেল কক্ষ তল্লাশি করে আজিজুলের স্ত্রী ও সন্তানের লাশ দেখতে পায়। এক পর্যায়ে পুলিশের জেরার মুখে সে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে আজিজুলকে নিয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের একটি দল শিশুটির মাথা খুঁজতে করতোয়া নদীতে যায়। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মাথার খোঁজ মেলেনি।
জোড়া হত্যার পর নড়েচড়ে বসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সব শাখা। খবর দেওয়া হয় সিআইডির সিরাজগঞ্জের ক্রাইম সিন টিমকে। সেনাবাহিনী, র‍্যাব ও পুলিশ আলাদাভাবে কাজ শুরু করেছে। বিকেলে ক্রাইম সিনের কাজ শেষ হলে লাশ দুটি বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ মর্গে নেওয়া হয়।

সিআইডির ইন্সপেক্টর মঞ্জুর মওলা বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে লাশ দুটি মর্গে নেয় পুলিশ। শিশুটির খণ্ডিত মাথা উদ্ধারে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বগুড়ায় পৌঁছে নদীতে নামে রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস।
হোটেল ব্যবস্থাপক রবিউল ইসলাম বলেন, শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে খুন করে ৯টায় হোটেল ছাড়ে আজিজুল। তার মতিগতি দেখে সন্দেহ হয়েছিল– কোনো একটা অপরাধ সে করেছে।

হত্যার কথা স্বীকার
আজিজুল জবানবন্দিতে পুলিশকে জানিয়েছে, তার অনুপস্থিতিতে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে স্ত্রী। বিষয়টি তার মা-বাবাও জানেন। তারা আশামণিকে শাসনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আজিজুলও ব্যর্থ হয়ে খুনের পরিকল্পনা করে। যৌতুকের বিষয়টি আজিজুল অস্বীকার করেছে।

সন্তান কী দোষ করেছে– এ বিষয়ে আজিজুল পুলিশকে বলে, স্ত্রী বেঁচে নেই; সন্তান বেঁচে থাকবে কার আশায়? তাই তাকেও খুন করে ফেলি। আজিজুল যে চাকু দিয়ে গলা কাটে, সেটি শনিবার বিকেলেই শহরের রেলঘুণ্টি এলাকার একটি দোকান থেকে কিনে ব্যাগে ভরে রাখে।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ (সদর সার্কেল) সরাফাত ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় শাজাহানপুর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এখন প্রকৃত খুনের কারণ জানতে হবে।

আজিজুলের বাড়ির লোকজন লাপাত্তা
হত্যাকাণ্ডের খবর ছড়িয়ে পড়লে আজিজুলের মা-বাবাসহ পরিবারের সবাই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। স্থানীয় কালেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘আজিজুলের পরিবারের লোকজন খুনের খবর হয়তো আগেই জানতে পেরেছেন। তাই তারা আগেভাগেই পালিয়েছেন। আমরা আজ দুপুর বেলায় জানতে পারি।’

আশামণির পরিবারের দাবি
আশামণির বাবা আসাদুল ইসলাম শহরের ফতেহ আলী বাজারের ফলের দোকানের কর্মচারী। একমাত্র মেয়ে ও নাতির নির্মম খুনের সংবাদে তিনি অঝোরে কাঁদছেন। আশামণির মা গোলাপি বেগম এখন শোকে পাথর।
আসাদুলের দাবি, আজিজুল বিয়ের সময় শহরে তিন শতক জমি চেয়েছিল। জমির বদলে এক বছর আগে এক লাখ টাকা দেন। বাকি টাকার জন্য প্রায়ই তাঁর মেয়েকে নির্যাতন করত। হত্যার আগের দিন শ্বশুরবাড়িতেও টাকা কিংবা জমির জন্য বকাঝকা করে আশামণিকে। না দিলে পরিণতি খারাপ হবে বলেও হুমকি দেয়। এক পর্যায়ে শনিবার মেয়েকে বাড়ি থেকে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে খুন করে।বড় ভাইয়ের সূত্রে বিয়ে
আজিজুল সেনাসদস্য হিসেবে তখন চট্টগ্রাম সেনানিবাসে চাকরি করত। সেখানে পরিচয় হয় আশামণির বড় ভাই সেনাসদস্য গুলজার হোসেন শুভর সঙ্গে। এর সূত্র ধরে তিন বছর আগে আশামণির সঙ্গে আজিজুলের বিয়ে হয়। এক বছর আগে তাদের ঘরে ছেলেসন্তান জন্ম নেয়। আশামণি আজিজুলের গ্রামের বাড়ি হুইটনগরে থাকতেন। দুই মাস আগে ছুটিতে চট্টগ্রাম থেকে আজিজুল বাড়ি আসে। গতকাল ছিল ছুটির শেষ দিন। তিন দিন আগে স্ত্রীর সঙ্গে শ্বশুরবাড়ি আসে আজিজুল। শনিবার বিকেল ৪টার দিকে স্ত্রী-সন্তানকে শহরে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বের হয়েছিল।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
Theme Customized BY WooHostBD