1. admin@orieldigital.pw : rahad :
  2. Jhrepons@gmail.com : halchal :
নতুন করে কি ঘটতে পারে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ? | Daily Halchal Somoy
শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৫৮ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
গোপালগঞ্জের সংহিসতার সাথে পুরনো দৃশ্যকে অসত্যভাবে সম্পৃক্ত করে প্রচার দামি ঘড়ি-আইপ্যাড দেখে লোভ হয়েছিল ‘প্রলোভন’ জয়ের গল্প লিখলেন জ্বালানি উপদেষ্টা যাত্রাবাড়ী রাজনৈতিক হালচাল-সাফকথা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ ভাতা বেড়ে দ্বিগুণ নির্বাচন বৈধ না হলে তা আয়োজনের কোনো অর্থ নেই: ড. ইউনূস নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন কিনা, মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থাকে স্পষ্ট করলেন ড. ইউনূস শেখ মুজিবের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শোক জানিয়ে শোবিজ তারকাদের পোস্ট শিল্প খাতে মন্দা কাটছে না গাজীপুরে এক বছরে ১০৬ কারখানা বন্ধ, ‘অপরাধে ঝুঁকছেন’ বেকার শ্রমিকেরা ভারতে ৩ মাসে ২০০ মানুষের ধ’র্ষ’ণের শিকার বাংলাদেশি কিশোরি

নতুন করে কি ঘটতে পারে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ?

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ২৯ জুন, ২০২৪
  • ৪১২ Time View

রাখাইনে রোহিঙ্গারা গ্রাম ছেড়ে পালাচ্ছে

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুতে গত কয়েক দিন ধরে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে চলা যুদ্ধের তীব্রতা আরও বেড়েছে। বেড়েছে আকাশপথে যুদ্ধবিমানের হামলাও। এতে সেখানে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে।গতকাল মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত মংডুতে তুমুল সংঘর্ষ হয়। এতে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত এলাকা কেঁপে ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে সেখানকার (মংডুতে) রোহিঙ্গারা প্রাণ বাঁচাতে এদিক-সেদিক ছোটাছুটি শুরু করে। আবার অনেকে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষা করছে।তবে রোহিঙ্গারা যাতে নতুন করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য সীমান্ত ও নাফ নদীতে বিজিবি-কোস্টগার্ড সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।রাখাইন ও সীমান্তে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি সময় দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি রাখাইনে মংডু শহর নিয়ন্ত্রণ নিতে সামরিক বাহিনীকে তুমুল হামলা চালিয়ে শক্ত অবস্থা নেয়। দেশটির সামরিক বাহিনীও শহরটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আকাশপথসহ ত্রিমুখী হামলা চালায় আরাকান আর্মির ওপর। দুপক্ষের তুমুল যুদ্ধে প্রাণহানিও ঘটেছে।এই গৃহযুদ্ধে মংডু শহরের সুদাপাড়া, হাদিবিল, নুরুল্লা পাড়া, হাইর পাড়া, মুন্নী পাড়া, সাইরা পাড়া, ফাতনজা, ফেরানপ্রু, সিকদার পাড়া, হাঁড়ি পাড়া, হেতিল্লা পাড়ার বাসিন্দারা গ্রাম ছেড়ে পালাচ্ছে। তাদের মধ্য অনেকে সীমান্ত দিয়ে এপারে অনুপ্রবেশের অপেক্ষা জড়ো হয়ে রয়েছে। ফলে মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে টেকনাফে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) সদস্যদের অনুপ্রবেশের ঘটনাও ঘটতে পারে।জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর বলছে, রাখাইনে দুপক্ষের যুদ্ধের জেরে মংডু ও বুথিডংয়ে ৭০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা আটকা পড়েছে।এদিকে বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা ইতোমধ্যে বিভিন্ন উপায়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে বলে সম্প্রতি রয়টার্স খবরে উল্লেখ করেছে। এ ছাড়া বুধবার ভোরে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গাদের একটি দল অনুপ্রবেশের চেষ্টা করলে সীমান্তরক্ষীরা তাদের প্রতিহত করেছে বলে জানা গেছে।

নতুন করে কি ঘটতে পারে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ?

অনুপ্রবেশের বিষয়ে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (৮-এপিবিএন) অধিনায়ক অ্যাডিশনাল ডিআইজি মোহাম্মদ আমির জাফর বলেন, ‘কয়েক মাস ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যুদ্ধ চলছে। ফলে সাধারণ রোহিঙ্গা যারা সেখানে অবস্থান করছিল, তারা সেখানে টিকতে না পেরে বিভিন্ন দিকে পালাচ্ছে। আমাদের দেশের দিকেও আসার চেষ্টা (বাংলাদেশে প্রবেশের) করছে। দু-এক জন হয়তো প্রবেশও করে থাকতে পারে।’সীমান্তে বিজিবি-কোস্টগার্ড কাজ করছে উল্লেখ করে অধিনায়ক জাফর বলেন, ‘আমাদের বাহিনীর তৎপরতার কারণে তারা (রোহিঙ্গারা) সেভাবে ঢুকতে পারছে না। তবে আমাদের পরিষ্কার বার্তা হচ্ছে, নতুন করে আর কোনও রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া হবে না।’এদিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংঘাতের জেরে নাফ নদীর ওপারে মংডু শহরের কয়েকটি এলাকার আশপাশে রোহিঙ্গারা জড়ো হয়ে রয়েছে। সীমান্ত পাড়ি দিয়ে টেকনাফে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সীমান্তের লোকজন।মিয়ানমার থেকে বিকট বিস্ফোরণের শব্দে এপারে সীমান্তের মানুষ ভয়ের মধ্য আছেন বলে জানিয়ে টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, মিয়ানমার থেকে বিকট বিস্ফোরণে শব্দ অব্যাহত রয়েছে। রোহিঙ্গাদের একটি অংশ বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করছে বলে শোনা যাচ্ছে। তবে নাফ নদী অতিক্রম করে মিয়ানমারের লোকজনের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও কোস্টগার্ড।সীমান্তের স্থানীয় লোকজন জানান, মিয়ানমারের মংডু টাউনশীফের বিপরীতে টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়া থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এবং সাবরাংয়ের পূর্বে নাফ নদীর ওপারে মংডু শহরের অবস্থান। মংডু শহরের নাফ নদী দিয়ে প্রবেশপথ খায়েনখালী খাল। এই খালের মোহনায় রোহিঙ্গাদের জড়ো হতে দেখা গেছে। ওই সীমান্ত এলাকায় প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী বিদ্রোহী আরাকান আর্মির দখলে থাকা এলাকা চৌকি উদ্ধারের জন্য এমন গোলাগুলি বলে সীমান্ত এলাকার লোকজন মনে করছেন।রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, মিয়ানমারে এখনও সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বসবসা করছে। এর মধ্য রাখাইনের বুথেডংয়ে আড়াই লাখ, মংডুতে তিন লাখ এবং বাকিরা আকিয়াবসহ অন্য শহরে রয়েছে। বর্তমানে মংডুতে হামলা হচ্ছে, সেখানে অধিকাংশ রোহিঙ্গা নাগরিকের বসবাস। তাদের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ নাফ নদী অতিক্রম করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার চেষ্টা চালাচ্ছে।

সীমান্তে কিছু রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে বলেও শুনেছি উল্লেখ করে টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরীপাড়ার নবী হোসেন বলেন, রাতভর ওপারের গোলার বিকট শব্দে নির্ঘুম ও ভয়ে রাত কেটেছে। বুধবার সকালে থেমে গোলার চলছে ওপারে। ফলে বিজিবি আজ বাংলাদেশ-মিয়ানমার ট্রানজিট জেটিঘাটে সাধারণ মানুষের চলাচল বন্ধ রেখেছে। তা ছাড়া সেখানে কিছু রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে বলেও শুনেছি।

নতুন করে কি ঘটতে পারে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ?

টেকনাফ সীমান্তের বাসিন্দা মো. ইসলাম বলেন, রাতভর মংডুতে তুমুল যুদ্ধে আমরা সীমান্তের মানুষ ঘুমাতে পারিনি। অনেকের ঘরের বাইরে রাত কেটেছে। একটু পরপরই বিকট গুলির শব্দে সীমান্ত কেঁপে ওঠে। এর ভয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ি। রাতের মতো এমন গোলার শব্দ আগে কখনও শুনিনি। এ পরিস্থিতিতে যেকোনও মুহূর্তে সীমান্তে আবারও অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে।

ক্যাম্পের কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, দুই পক্ষের গোলাগুলিতে অনেক রোহিঙ্গা মারা যাচ্ছে। এখন পাশের দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ছাড়া তাদের যাওয়ার মতো কোনও জায়গা নেই। তাই যেকোনও উপায়ে তারা বাংলাদেশের দিকে ছুটতে পারে। কিন্তু যারা আসার জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, তাদের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।

আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, মূলত যুদ্ধের নামে রাখাইনে যেসব রোহিঙ্গা রয়েছে, তাদের নিশ্চিহ্ন করতে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্য নাটক চলছে। আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অনুরোধ করবো, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে সেফজোন গড়ে তুলে তাদের সেখানে বসবাসের উপযোগী করা হোক। অন্য এসব মানুষ প্রাণে বাঁচতে এদিক-ওদিক পালাতে থাকবে।

এদিকে আরাকান আর্মি ও দেশটির সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষের কারণে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফ নদীতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যরা দিনরাত নাফ নদী ও সীমান্ত সড়কে টহল বাড়িয়েছে। সেটি চলমান এবং যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সব সময় প্রস্তুত বিজিবি ও কোস্টগার্ড।

বিজিবির ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকালে ৩ হাজার ৩৫৪ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে। বাকিদের মিয়ানমারে (স্বদেশে) ফেরত পাঠায় বিজিবি। তাদের মধ্যে ৮৪৮ জন নারী, ৭৪৯ শিশু ও ১৭৫৭ জন পুরুষ। আর তিন রোহিঙ্গাকে থানায় দেওয়া হয়।এ বিষয়ে টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেছিলেন, সীমান্ত অনুপ্রবেশ ঠেকানার পাশাপাশি যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছেন।জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরী বলেন, সীমান্তে মিয়ানমারে গোলার বিকট শব্দ বেড়েছে। তবে সীমান্তের মানুষ যাতে ভয়ভীতিতে না থাকে, সে জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। পাশাপাশি অনুপ্রবেশ ঠেকানোর পাশাপাশি যেকোনও পরিস্থিতি সামাল দিতে সীমান্তে আমাদের বিজিবি-কোস্টগার্ড প্রস্তুত রয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
Theme Customized BY WooHostBD