1. admin@orieldigital.pw : rahad :
  2. Jhrepons@gmail.com : halchal :
‘অধিকার দিতে হবে না, কেড়ে না নিলেই হবে’ | Daily Halchal Somoy
শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:২৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
দামি ঘড়ি-আইপ্যাড দেখে লোভ হয়েছিল ‘প্রলোভন’ জয়ের গল্প লিখলেন জ্বালানি উপদেষ্টা যাত্রাবাড়ী রাজনৈতিক হালচাল-সাফকথা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ ভাতা বেড়ে দ্বিগুণ নির্বাচন বৈধ না হলে তা আয়োজনের কোনো অর্থ নেই: ড. ইউনূস নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন কিনা, মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থাকে স্পষ্ট করলেন ড. ইউনূস শেখ মুজিবের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শোক জানিয়ে শোবিজ তারকাদের পোস্ট শিল্প খাতে মন্দা কাটছে না গাজীপুরে এক বছরে ১০৬ কারখানা বন্ধ, ‘অপরাধে ঝুঁকছেন’ বেকার শ্রমিকেরা ভারতে ৩ মাসে ২০০ মানুষের ধ’র্ষ’ণের শিকার বাংলাদেশি কিশোরি বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি চ্যালেঞ্জের মুখে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন

‘অধিকার দিতে হবে না, কেড়ে না নিলেই হবে’

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪
  • ৪১৩ Time View

 

‘কত জায়গায় কাজ চেয়েছি পাইনি। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ কাজ চাইতে গিয়ে যৌন হয়রানির শিকার হয়ে, অসুস্থ হয়ে পড়ে থেকেছে— আমাদের চোখের সামনে। আমাদের যদি কোনোদিক দিয়েই আয় না থাকে, তাহলে আমরা খাবো কী? বরাবরই আমাদের প্রধান সমস্যা হয়ে ওঠে এই না খেতে পাওয়া। আমাদেরকে আপনাদের কিছু দিতে হবে না। আমাদের জন্মে আমাদের কোনও দায় নেই, আমি যখন জন্ম নিয়েই নিয়েছি, এখন বাঁচার ব্যবস্থাটা করে দিন।’

সেই বাঁচার ব্যবস্থা করতে এখন অনেক হিজড়া সম্মান নিয়ে ব্যবসা করছেন, উন্মুক্ত পরিসরে দোকান করছেন, মানবাধিকারের কাজ করছেন। তারা বলছেন, নিজেদের সম্মান রক্ষা করতে হবে আমাদের সামষ্টিকভাবেই। সরকারের তরফে বারবার চাকরির ব্যবস্থা করার কথা বলা হলেও এখনও তেমন কোনও উদ্যোগ নেই উল্লেখ করে তারা বলছেন, এমনকি বেসরকারিভাবে কিছু জায়গায় চাকরি দিলেও হিজড়া সনদ জমা দিয়ে চাকরি বাঁচাতে হয়। কখন কার অভিযোগে সে চাকরি চলে যায় কে জানে!

এদিকে রাজধানীর চারটি বড় বড় সিগন্যালে দলবেঁধে টাকার জন্য মানুষের কাছে হাজির হন হিজড়ারা। কেউ টাকা দিলে দোয়া দেন, না দিলে খুব বেশি জোর করেন না। সুন্দর করে নারী সেজে শোভন পোশাকে হাজির হন। কোথাও কাজ না পেয়ে ভিক্ষাবৃত্তিকেই মেনে নিতে হয়েছে। যদিও যারা বহুদিন ধরে হিজড়ার অধিকার নিয়ে কাজ করছেন তারা বলছেন, ভারতে সিগন্যালে টাকা তুলতে দেখে ৩/৪শ হিজড়া ঢাকায় এটা শুরু করেছে। তারা অনেকটা দলছুট। আমাদের সাপ্তাহিকভাবে দোকানে মার্কেটের টাকা তোলার রেওয়াজ আছে, সিগন্যালে দাঁড়াতে নিষেধ করলেও ওরা শোনে না।

আগারগাঁও সিগন্যালে বেশ কয়েকজন হিজড়া টাকা তোলেন। তাদের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে কথা হয়। কাজ দিলেও করতে চায় না— তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ কেন করা হয় জানতে চাইলে নাদিরা হিজড়া বলেন, ‘এই কথা আপনি বিশ্বাস করেন? আপনার সন্তানের স্কুলে কোনও হিজড়া আছে? আপনার সন্তানের সঙ্গে কোনও হিজড়া গান শেখার স্কুলে যায়? তাদের শিক্ষা দেবেন না, তাদের নিজেদের বাবা-মা সমাজে তাদের পরিচয় করিয়ে দেবে না, আপনি তাকে কী চাকরি দেবেন। ধরে নিয়ে গিয়ে পিয়নের চাকরি দেবেন, টয়লেটের পাশে বসায়ে রাখবেন। একদল বলবে, এখানে হিজড়া কেন, তাদের ভয় লাগে। আরেক দল বলবে, তাদের ঘৃণা লাগে। আবার আমাদের যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ কথাও তারাই বলবে। এটাই আমাদের সবার কথা।’ এরপর বলেন, ‘রাস্তায় না নামলে টাকা কোথায় পাবো?’

সমাজসেবা অধিদফতরের সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, দেশে হিজড়ার সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। এরমধ্যে ৮০ শতাংশের বসবাস ঢাকাতেই। তবে প্রকৃত সংখ্যা এরচেয়ে বেশি বলে মনে করেন হিজড়া জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।

হিজড়া জনগোষ্ঠীকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দিতে সরকার ২০১৩ সালের নভেম্বরে ‘হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন নীতিমালা’ প্রণয়ন করে।  যার উদ্দেশ্য ছিল— স্কুলগামী হিজড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষিত করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এবং উচ্চতর স্তরে উপবৃত্তি প্রদান। গত চার বছর ধরে ১২০০- এর ওপরে এই উপবৃত্তি এবং ২৬০০ হিজড়া বয়স্ক ভাতার সুবিধা পাচ্ছেন।

এই পাস করে যাওয়া ছেলেমেয়েরা যেন চাকরি করতে পারে, সেই সুযোগ সরকার করে দেবে বলেও করেনি, উল্লেখ করে ট্রান্সজেন্ডার অধিকারকর্মী শোভা হিজড়া বলেন, ‘এখনও কেউ সরকারি চাকরি করছে না। ফলে সেটা বাস্তবায়ন হয়েছে বলা যাচ্ছে না। বেসরকারিভাবেও যে একটা-দুটা সংস্থা এগিয়ে এসেছে, সেখানেও বেশ কষ্ট করে টিকে থাকতে হয়। এতদিন ধরে আমরা কাজ করছি— এখন এসব সমাধান হয়ে যাওয়া দরকার ছিল। আমাদের কোনও বাড়তি অধিকার বা দাবি নেই, সাধারণ নাগরিকের যে অধিকার, সেটা থেকে আমাকে বঞ্চিত না করলেই হলো।’

তবে একেক দলিলে একেকভাবে নামে চিহ্নিত করাটা অধিকার আদায়ের পথে বড় বাধা উল্লেখ করে ট্রান্স অধিকারকর্মী জয়া শিকদার বলেন, ‘‘কোথাও আপনি হিজড়া, কোথাও আপনি তৃতীয়লিঙ্গ কোথাও ট্রান্সজেন্ডার লিখে রাখছেন, আপনি আসলে কী— সরকার সেই পরিচয়ইতো ঠিক করতে পারেননি, চাকরি দেবে কীভাবে। আর বেঁচে থাকার জন্য রাস্তায় না নেমে উপায় থাকে না। আপনারা যারা নিজেদের ‘স্বাভাবিক’

আর আমাদের ‘অস্বাভাবিক’ মনে করেন, তারা মানবিক হন। অধিকার দিতে হবে না। আমার অধিকার কেড়ে নিয়েন না, তাহলেই হবে।’’

হিজড়াদের চাকরির বিষয়ে অগ্রগতি ও রাস্তায় টাকা তোলা থেকে বিরত করতে করণীয় জানতে চাইলে সমাজসেবা অধিদফতরের উপপরিচালক (ভিক্ষুক, চা শ্রমিক, হিজড়া) শাহজাহান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘হিজড়াদের অধিকার ও সুরক্ষা নিয়ে আইনের খসড়ার কাজ চলছে। আমরা চাই, তারা রাস্তায় না থেকে কাজ করুক।’ সেই কাজ কেউ না দিলে রাস্তায় না থেকে উপায় কী, প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা উৎপাদনশীল কোনও প্রকল্পে তাদের কাজে লাগানো যায় কিনা, সে পরিকল্পনা করতে পারি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
Theme Customized BY WooHostBD